বিটকয়েন ৯০ হাজারে, ১ লাখ হচ্ছে কবে?
ঢাকা টুডে ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ এএম
আমেরিকার সদ্য সমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর থেকেই ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার সরগরম। দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প ক্রিপ্টোকারেন্সি-বান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন করবেন এবং এই খাতে সরকারী নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে আনবেন, এই আশায় ক্রিপ্টোর বাজারে গত এক সপ্তাহে লেনদেন যেমন বেড়েছে তেমনি দামও উঠেছে রেকর্ড উচ্চতায়।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি
হচ্ছে বিটকয়েন, যার দাম ইতোমধ্যেই কয়েন প্রতি ৯০ হাজার ডলার ছুঁই ছুঁই
করছে। আজ (মঙ্গলবার) বিটকয়েনের দাম এক পর্যায়ে ৮৯ হাজার ৯৮২ ডলারে (৮৯,৯৮২
ডলারে) পৌঁছয়, যেটা বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম। তবে এই রিপোর্ট লেখার
সময় বিটকয়েনের দাম ছিল ৮৭ হাজার ১০০ ডলার (৮৭,১০০ ডলার)।
নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়ের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই বিটকয়েনের দাম পৌঁছেছে নতুন উচ্চতায়। এ যেন রেকর্ড ভাঙ্গা-গড়ার এক খেলায় মেতেছে বিটকয়েনের বাজার। গত বুধবার (৬ নভেম্বর) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফলাফল প্রকাশের দিনই বিটকয়েনের দাম প্রথমবারের মতো পৌঁছে যায় ৭৫ হাজার ডলারে। এরপর গত সাত দিনে বিটকয়েন প্রতি দাম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৫ হাজার ডলার।
গত ৫ নভেম্বর আমেরিকায় অনুষ্ঠিত হয় প্রেসিডেন্ট
নির্বাচন। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত বিটকয়েনের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩০
শতাংশ। উল্লেখ্য, বিটকয়েনের দামে পূর্ববর্তী রেকর্ডটি (৭৩,৭৫০ ডলার) হয়েছিল
চলতি বছরের ১৪ মার্চ। নভেম্বরের শুরুতে ভাঙ্গার আগ পর্যন্ত রেকর্ডটি
স্থায়ী ছিল ৭ মাসেরও বেশি সময়।
উল্লেখ্য,
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় ক্রিপ্টোকারেন্সি সহায়ক নীতিমালা
তৈরিসহ ক্রিপ্টোর বাজারে সরকারী হস্তক্ষেপ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি
দিয়েছেন। শুধু তাই নয় আমেরিকার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট আমেরিকাকে
ক্রিপ্টোকারেন্সির রাজধানীতে পরিণত করবেন বলেও আশ্বাস দিয়ে রেখেছেন।
পাশাপাশি তিনি জাতীয়ভাবে বিটকয়েনের এক মজুদ (স্টকপাইল) তৈরিরও ঘোষণা
দিয়েছেন।
ট্রাম্পের বিজয়ে বিটকয়েনের দামে ঊর্ধ্বগতি তাই বেশ
অনুমিতই ছিল। তবে সেটা যে এতটা উপরে উঠবে সেটা অবশ্য অনেকেই ধারণা করতে
পারেননি। তবে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে ট্রাম্পের উৎসাহব্যঞ্জক প্রতিশ্রুতির
পাশাপাশি আরেকটি ‘ফ্যাকটর’ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বিটকয়েনের দামে
সাম্প্রতিক এই ঊর্ধ্বগতিতে। আর এই ফ্যাকটরটি হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও
প্রযুক্তি জগতের প্রভাবশালী উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক।
এবারের
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের হয়ে প্রচারণায় অংশ নেওয়া সবচেয়ে
প্রভাবশালী ব্যক্তি হচ্ছেন টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক। এরই মধ্যে ট্রাম্প
সরকারে মাস্ক যে বড় দায়িত্ব পেতে চলেছেন সে বিষয়টিও বেশ পরিষ্কার হয়েছে।
‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ নামে নতুন এক ডিপার্টমেন্টের
দায়িত্ব পেতে চলেছেন ইলন মাস্ক।
ইলন মাস্ক নিজেও ক্রিপ্টোকারেন্সির একজন জোড়াল
সমর্থক। বাজারে তাঁর নিজের একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি আছে বলেও বিভিন্ন সময়
গুঞ্জন শোনা গেছে, যদিও তিনি নিজে বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। তবে মাস্ক
স্বীকার করেছেন যে, ক্রিপ্টোর বাজারে তাঁর বিনিয়োগ রয়েছে।
বিটকয়েন কি তবে অচিরেই ১ লাখ ডলারে পৌঁছবে?
কবে
নাগাদ বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ডলারে পৌঁছবে- আজ থেকে এক সপ্তাহ আগেও এই
প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই বলতেন আগামী বছর কোনো এক সময়। অনেকে এমনকি ২০২৫
সালেও বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ডলারে পৌছবে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতো।
বিশেষ করে গত মার্চের রেকর্ড যখন সাত মাসের বেশি স্থায়ী ছিল তখন বিটকয়েনের
দাম অচিরেই ১ লাখ ডলারে উঠবে এমন সম্ভাবনা অতি আশাবাদীরাও দেখেনি।
কিন্তু
গত এক সপ্তাহে আশার পালে যে হাওয়া লেগেছে তাতে হয়তো চলতি বছরের বাকী
সময়টাতেই বিটকয়েনের দাম ছয় অঙ্কে পৌঁছে যেতে পারে। অর্থাৎ বিটকয়েনের দামে
সাম্প্রতিক যে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা গেছে সেটা অব্যাহত থাকলে, বা তার কিছুটা
বজায় থাকলেও ২০২৪ সালেই ১টি বিটকয়েনের দাম হতে পারে ১ লাখ মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশী মুদ্রায় ১ লক্ষ ১৯ কোটি টাকাও বেশি।
তথ্যসূত্র: বাইন্যান্স, রয়টার্স