নির্বাচিত হলে আন্দোলন সঙ্গীদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করব : মির্জা ফখরুল
ঢাকা টুডে ২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি আগামীতে নির্বাচিত হতে পারলে আন্দোলনের সঙ্গীদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত হয়ে এলে আমরা একা দেশ চালাব না। একটা জাতীয় সরকার গঠন করে যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছে, তাদের নিয়ে দেশ চালাব। সমস্যাটা কোথায়, সন্দেহটা কোথায়? সন্দেহ কিন্তু আপনাদের মধ্যে আসতে শুরু করেছে।’
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়। দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থেই দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা রাজনীতিবিদরা বলছি, আমরা যারা একটু বয়স্ক, প্রাজ্ঞ, বলছি— নির্বাচন দ্রুত করুন। কেন বলছি? বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য? না। নির্বাচন দ্রুত না হলে সমস্যাগুলো বাড়বে, অন্যান্য সমস্যা বাড়বে। এখন যারা গণতন্ত্র ধবংস করতে চায়, দেশের স্থিতিশীলতা ধবংস করতে চায় তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, দেখুন না, কত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এখন দেশে সাম্প্রদায়িকতা তৈরির জন্য কাজ করা হচ্ছে। ফ্যাক্টরি জ্বালিয়ে দিচ্ছে, যা আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। দিনের পর দিন জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এরা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) কিছুই করতে পারছে না।
তিনি বলেন, কেন করতে পারছে না? পলিটিক্যাল শক্তি নেই। আজকে যদি একটা নির্বাচিত সরকার থাকত, তার পেছনে জনগণ থাকত, তাহলে এটা এত সহজ ছিল? এরপরও আমরাই যতটুকু বন্ধ করার বন্ধ করতে পেরেছি, আমাদের কর্মীরা গিয়ে ওইসব বন্ধ করেছে। বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষ যেসব কথা বলছে তা গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মহাখালীতে রেলপথ অবরোধের কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, কালকে (সোমবার) তিতুমীর কলেজের ছাত্ররা স্ট্রাইক করেছে- তাদের বিশ্ববিদ্যালয় করতে হবে। গভর্মেন্ট জানতো না এরকম হতে পারে? তাহলে কেন আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। এসব প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসলে এই সরকার এখনো স্ট্যাবল হতে পারেনি ওইসব দিক থেকে। আমরা বার বার বলে আসছি, এসব আপনাদের কাজ না। আপনারা তাড়াতাড়ি একটা নির্বাচন দেন। রাজনীতিবিদরা তাদের কাজ করুক। আমরা তো সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে দিয়েছি। ওখানে দেখেন, কোনটা আপনারা নেবেন, কোনটা নেবেন না।
বিএনপি মহাসচিব নির্বাচন কমিশন ঠিক করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা বলিনি যে এত তারিখের মধ্যে দেন, ওই তারিখের মধ্যে দেন। আমরা চেয়েছি রোডম্যাপ। কবে কী করবেন, আপনারা জানান। সেটা জানালে তো মানুষের মধ্যে আস্থা আসবে যে, এত তারিখে ইলেকশন হবে। মানুষ তো ইলেকশন চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রথম দিন থেকে বলছি, এই সরকারের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। এই সরকারের সাফল্য মানে জনগণের সাফল্য, এই গণঅভ্যুত্থানের সাফল্য। এই সরকার ফেল করলে আমরা ফেল করব। আমরা চাই না- হাসিনা আবার ফিরে আসুক, আওয়ামী লীগের ওই দুঃশাসন ফিরে আসুক। চাই না বলেই বার বার বলছি, আমাদের সব অভিজ্ঞতা দিয়ে বলছি। একটা কথা আছে, উইজডম (বিজ্ঞতা), এই উইজডম আপনারা প্রয়োগ করুন, চেষ্টা করুন। আমরা আপনাদের এটুকু বলতে চাই, রাজনৈতিক দলগুলো সবসময় বাংলাদেশের ভালো করার চেষ্টা করে।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ, এমবিএ অ্যাসোসিয়েশনের সৈয়দ আলমগীর, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক ডা. একেএম আজিজুল হক, অধ্যাপক হারুন আল রশীদ, ডা. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামসুল ইসলাম, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান শামীম, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোট রফিকুল ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য দেন।