বৈষম্যহীন দেশের লক্ষ্য নিয়েই সংবিধান সংস্কারের তাগিদ ড. কামাল হোসেনের। তবে, মৌলিক বিষয়ে হাত না দেওয়ার আহ্বান তাঁর। সোমবার সন্ধ্যায় সংবিধান দিবসের এক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
এসময় তিনি বলেন, সংবিধান মানুষের তৈরি, মানুষ তা শুধরাতে পারে। এদিকে, বর্তমান সরকারের সংবিধান সংস্কারের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সংবিধান দিবসে সুপ্রিম কোর্টের বার অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা। বক্তব্য দেন বরেণ্য আইনজীবী ও বিশিষ্টজনেরা।
ইতিহাসবিদ
সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, জনগণ নয়, শাসকের ইচ্ছাতেই হয়েছে সংবিধানের ১৬টি
সংশোধনী। অন্তর্বর্তী সরকার-ব্যবস্থা সংবিধানে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন,
‘অনির্বাচিত সরকার সংবিধান সংশোধন করতে পারে না।’
সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে, অনির্বাচিত সরকার কোনো সংস্কার করতে পারে না, শুধুমাত্র সুপারিশ করতে পারেন।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, ‘দেশ চালাতে গেলে নানা সমস্যা হয়। কিন্তু তা সমাধান না করে, পদ্ধতি বদল এক প্রকার অপরিপক্বতা।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, ‘সংবিধান সম্পর্কে আমাদের ধারণাগুলি কেন যেন এখনো পরিপক্ব হয় নাই, এটা বেশিরভাগই ১২ ধরনের সরকার গঠন করে কোনো লাভ হয় নাই, এখন ১৩ ধরনের সরকার গঠন করার চেষ্টা করবো।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের মতে, সংবিধান ঠিকই আছে, তবে স্বাধীন ও সাহসী বিচারব্যবস্থা না থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে সংবিধান সংশোধন করলে তা অনুমোদন করবে কে-এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এটি নতুন জটিলতা তৈরি করবে।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘অনেকেই চেষ্টা করছেন যে, নতুন করে সংবিধান লিখব বা সংবিধান সংস্কার করব। কারা এই সংবিধান অনুমোদন করবে, সবশেষ সংসদ। সবশেষ সংসদ ডেকে লাভ নেই। ভবিষ্যত সংসদ, যদি তারা না করে।
সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, বৈষম্যহীন দেশের লক্ষ্য সামনে রেখেই সব সাংবিধানিক সংস্কার করতে হবে। তবে মৌলিক বিষয়ে হাত দেওয়া যাবে না। আর সেই সংস্কার ব্যক্তির ইচ্ছায় নয়, জনগণের মতামত নিয়েই করতে হবে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘জনগণের মতামত উনাকেও নিতে হবে, মানতে হবে। যদি দেখা যায় ভালো একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামত গড়ে ওঠেছে, তখন সংবিধানে হাত দেওয়া যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, সংবিধান জনগণের জন্য, তাই জনগণই তা রক্ষা করবে। এ নিয়ে সব নাগররিককে সচেতন থাকতে হবে।