Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

মধ্যপ্রাচ্য

২৯ বছর মসনদে থাকা বাবার হাতেই উত্থান বাশারের, ক্ষমতায় টিকলেন দুই যুগ

Icon

ঢাকা টুডে ২৪ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ পিএম

২৯ বছর মসনদে থাকা বাবার হাতেই উত্থান বাশারের, ক্ষমতায় টিকলেন দুই যুগ

সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল-আসাদ ও তার ছেলে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।

হাফিজ আল-আসাদকে ‘আধুনিক সিরিয়া’র রূপকার বলা হয়। ১৯৩০ সালে সিরিয়ায় তাঁর জন্ম। ছিলেন আরব সোশ্যালিস্ট বাথ পার্টির নেতা। ১৯৪৬ সালে দলটির রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। ১৯৫৫ সালে হাফিজ বিমানবাহিনীর পাইলট হিসেবে যোগ দেন।

সিরিয়ায় বাথ পার্টিকে শক্তিশালী করতে হাফিজের ভূমিকা ছিল। ১৯৬৬ সালে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানে বাথ পার্টি ক্ষমতায় আসে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হন হাফিজ। রাজনৈতিকভাবে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন তিনি। ১৯৭০ সালে নিজ রাজনৈতিক গুরু ও সিরীয় নেতা সালাহ আল-জাদিদকে সরাতে অভ্যুত্থান ঘটান হাফিজ। পরের বছরই সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন তিনি। ইরাকের নেতা সাদ্দাম হোসেনকে ‘দীর্ঘদিনের শত্রু’ মনে করতেন হাফিজ। ১৯৯০-৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধে সিরিয়া বাগদাদের বিপক্ষে ছিল। তিনি এ যুদ্ধে পশ্চিমা জোটকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

টানা ২৯ বছর ক্ষমতায় থেকে ২০০০ সালের ১০ জুন দামেস্কে মারা যান হাফিজ। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের দ্বিতীয় প্রজন্মের শাসনের সূচনা হয়। ওই বছরের ১৭ জুলাই প্রেসিডেন্ট পদে বসেন তাঁর ছেলে বাশার আল-আসাদ।

ক্ষমতায় যখন বাশার

বাশারের জন্ম ১৯৬৫ সালে, দামেস্কে। শৈশবে দামেস্কে পড়াশোনা শুরু। তিনি দামেস্ক ইউনিভার্সিটি থেকে চক্ষুবিজ্ঞানে পড়েছেন। হতে চেয়েছিলেন চিকিৎসক। ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় পারদর্শী তিনি। বাশার ক্ষমতায় এসে বিভিন্ন পদগুলোয় পরিবর্তন আনতে শুরু করেন। বিশেষ করে নিরাপত্তা সংস্থা ও সামরিক বাহিনীতে রদবদল করেন। নিজের আস্থাভাজন ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ সব পদে বসিয়ে প্রশাসনের লাগাম শুরু থেকেই নিজের হাতে রাখেন বাশার।

হাফিজ আল-আসাদের উত্তরসূরি হওয়ার কথা ছিল না তাঁর ছোট ছেলে বাশার আল-আসাদের। প্রথা মেনে হাফিজের পর তাঁর বড় ছেলে বাসেল আল-আসাদ ক্ষমতার কেন্দ্রে আসবেন, এটাই ভেবেছিলেন অনেকে। কিন্তু ১৯৯৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় বাসেলের মৃত্যু হয়। এতে সিরিয়ার রাজনৈতিক দৃশ্যপট বদলে যায়।

বাবার উত্তরসূরি হিসেবে দৃশ্যপটে আসেন বাশার আল-আসাদ। তখন বাশার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চক্ষুবিজ্ঞানে উচ্চতর পড়াশোনা করছিলেন। বাবার নির্দেশে দেশে ফেরেন। এরপর সিরিয়ায় সামরিক বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। রাজনৈতিক বিষয়ে হাতে-কলমে জ্ঞানার্জন করতে থাকেন।

বাশারকে তাঁর বাবাই একজন শাসক হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। ২০০০ সালে বাবার মৃত্যুর পর মাত্র ৩৪ বছর বয়সে তিনি দেশের শাসনভার নিজের কাঁধে তুলে নেন। ২০০৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাশার পুনর্নির্বাচিত হন। সিরিয়ার একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক নিরাপত্তার স্বার্থে নাম গোপন রাখার শর্তে এএফপিকে বলেন, ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ় মনোভাব ও সামরিক বাহিনীর অবিচল সমর্থন’ প্রেসিডেন্ট আসাদের কর্তৃত্ববাদী ভূমিকায় টিকে থাকার বড় শক্তি।

তথ্যসূত্র: এএফপি, বিবিসি, এনডিটিভি ও ব্রিটানিকা

ঢাকা টুডের একটি প্রকাশনা

অনুসরণ করুন