ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনের ফল পাল্টে দেওয়ার মামলা বাতিল
ঢাকা টুডে ২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনের ফল পাল্টে দেওয়ার মামলা বাতিল করেছে দেশটির একটি আদালত। ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে ফেডারেল এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৫ নভেম্বর) মামলাটি বাতিল করেন ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের ডিসট্রিক্ট জাজ তানিয়া চুটকান। এর ফলে ট্রাম্প যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন, তখন তার বিরুদ্ধে কোনও ফেডেরাল ফৌজদারি অভিযোগ থাকবে না।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের একজন ফেডারেল বিচারক দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি বড় মামলা খারিজ করে দিয়েছেন। এই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, তিনি অবৈধভাবে ২০২০ সালের নির্বাচন বাতিল করতে চেয়েছিলেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই ফৌজদারি মামলা এনেছিলেন বিশেষ প্রসিকিউটর জ্যাক স্মিথ। সোমবারই তিনি বিচার বিভাগের নীতির উদ্ধৃতি দিয়ে মামলাটি বাতিল করতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানান।পরে ডিসট্রিক্ট জাজ তানিয়া চুটকান মামলাটি “উইদাউট প্রেজুডিস” বাতিল করে দেন। যার অর্থ ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ করার পরে অভিযোগগুলো পুনরায় দাখিল করা যেতে পারে। এছাড়া জ্যাক স্মিথ গোপনীয় নথি ভুলভাবে সংরক্ষণের জন্য ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করে দায়ের করা তার মামলাটিও খারিজ করতে বলেছেন। অবশ্য উভয় ক্ষেত্রেই ট্রাম্প নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও বিজয়ী হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এর মাধ্যমে দেশটির প্রায় আড়াইশো বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এক মেয়াদের বিরতিতে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরতে চলেছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
অবশ্য নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জিতলেও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন শপথ নেবেন, তখন তার বিরুদ্ধে কোনও ফেডারেল ফৌজদারি অভিযোগ থাকবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ আদালতে পেশ করা এক ফাইলিংয়ে স্বীকার করেন, জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট বা বিচার মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘস্থায়ী রীতি অনুযায়ী তারা ক্ষমতাসীন কোন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করে না।
আদালতে আরেকটি ফাইলিংয়ে স্মিথ একটি অপেক্ষামান আপিল থেকে ট্রাম্পের নাম সরিয়ে ফেলার জন্য আটলান্টার আপিল আদালতকে অনুরোধ করেন।
ট্রাম্প ২০২১ সালে তার মেয়াদ শেষে হোয়াইট হাউস থেকে যাবার পর তিনি শত শত রাষ্ট্রীয় গোপনীয় দলিল ফ্লোরিডায় তার বাসভবনে জড়ো করে রেখেছিলেন বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল, সেই মামালা ফ্লোরিডার এক বিচারক বাতিল করেছিলেন। স্মিথ সেই মামলা পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে আপিল করেছিলেন।
প্রসিকিউটর বলেন, দুটি মামলার গুণগত মান এবং ন্যায্যতা নিয়ে তার কোনও সন্দেহ নেই, যদিও তিনি বলছেন অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে। পরে ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশাল-এ ঘোষণা দেন, “আমাকে অন্য যেসব মামলার মুখোমুখি হতে বাধ্য করা হয়েছে, সেগুলোর মত এই মামলাগুলোও বেআইনি এবং শূন্য, এবং এগুলো কখনোই আদালতে আনা উচিত ছিল না।”
তিনি বলেন, করদাতাদের ১০ কোটি ডলার “নষ্ট করা হয়েছে ডেমোক্র্যাট পার্টির রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, আমি, আমার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য। এটা ছিল রাজনৈতিক ছিনতাই এবং আমাদের দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ সময়, তারপরও আমি টিকে আছি শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এবং জিতেছি।”
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছিলেন, তিনি যদি জয়ী হন, তাহলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার “দুই সেকেন্ডের মধ্যেই” জ্যাক স্মিথকে বরখাস্ত করবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের আগেই স্মিথ জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট থেকে চলে যাবার পরিকল্পনা করছেন।