ভোট গণনার প্রস্তুতি নিচ্ছে মালদ্বীপের নির্বাচনী কর্মকর্তারা। রবিবার রাজধানী মালেতে। ছবি : সংগৃহীত
মালদ্বীপের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসে (পিএনসি) বড় জয় পেয়েছে। মুইজ্জু ভারত বিরোধী ও চীনপন্থি হিসেবে পরিচিত।
রবিবারের (২১ এপ্রিল) নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে তার পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় দ্বীপরাষ্ট্রটিতে চীনের প্রভাব আরও বাড়বে এবং ভারতের প্রভাব ক্রমশ কমবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। রবিবারের নির্বাচনে পিএনসি দেশটির সংসদের মোট ৮৬ আসনের মধ্যে ৬৬টিতে জয় পেয়েছে। অর্থাৎ তারা এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তাই তারা যে কোনো নীতি বা আইন সহজে পাস করতে পারবে।
প্রাথমিক নির্বাচনী ফল সরকারিভাবে ঘোষণা করতে প্রায় এক সপ্তাহ লাগবে। নতুন সংসদের যাত্রা হবে মে মাসের শুরু থেকে। এবারের নির্বাচনে মোট ৪১ জন নারী প্রার্থি ছিলেন। তাদের মধ্যে জিতেছে মাত্র তিনজন। তিনজনই মুইজ্জুর পিএনসির। এবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০১৯ জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে কম। তখন ভোট পড়েছিল প্রায় ৮২ শতাংশ।
রবিবারের আগে দেশটির সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পাটি (এমডিপি)। এবার তারা মাত্র ১২টি আসনে জিতেছে। এমডিপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রাজধানী মালে, আদ্দু সিটি এবং উত্তরে কুলহুধুফুশি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সব আসনে জিতেছে মুইজ্জুর পিএনসি পার্টি।
এমডিপি থেকে বের হয়ে ২০২৩ সালে ‘দ্য ডেমোক্রেট’ নামের একটি পার্টি করেছিলেন মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ। রবিবারের নির্বাচনে যে কয়টি আসনে পার্টিটি প্রার্থী দিয়েছে সবটিতে তারা হেরেছেন।আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের পার্টিও সব আসনে হেরেছে।
বিদায়ী সংসদে মুইজ্জুর পাটি পিএনসির সংসদ সদস্য ছিলেন মাত্র আটজন। তাই রবিবারের নির্বাচন মুইজ্জুর জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পার্টির পর্যাপ্ত সদস্য না থাকতায় গত সেপ্টেম্বরে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সংসদে মুইজ্জু এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো আইনই পাস করতে পারেননি। এখন পর্যন্ত তাকে সব কাজ করতে হচ্ছে নির্বাহী আদেশে।
সেপ্টেম্বরে ৪৫ বছর বয়সী মুইজ্জু ক্ষমতাগ্রহণ করেই মালদ্বীপে অবস্থানকারী সব ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তাকে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দেন। ইতোমধ্যে সব সেনা ফেরত পাঠানো হয়েছে। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে অবস্থানকারী কয়েক ডজন ভারতীয় সেনাবাহিনী সমুদ্রে জাহাজ চলাচল নজরদারি করত। বলা হয়ে থাকে, চীনের লবিংয়ের কারণে ভারতীয় সেনাদের ফেরত পাঠিয়েছে মুইজ্জু। সেনা ফেরত পাঠানো নিয়ে ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশটির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে চলতি মাসের শুরুতে বড় ও স্পর্শকাতর একটি অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চীনের কয়েকটি রাষ্ট্রীয় কোম্পানিকে দিয়েছে মুইজ্জুর প্রশাসন। বিরোধীরা এমডিপি মুইজ্জুর অর্থনৈতিক ও পররাষ্ট্র নীতির কঠোর সমালোচনা করে। তারা মনে করে, পিএনসির সব নীতি ব্যর্থ হতে বাধ্য।