মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে চাঁদরাতে হামলা চালায় ইসরায়েল বাহিনী। এতে নিহত এক শিশুর মরদেহ কোলে এক স্বজন ছবি: এএফপি।
‘এখানে কোনো ঈদ নেই। আছে শুধু মানুষের মরদেহ। আছে আহত ব্যক্তিদের হাহাকার। আমরা কীভাবে আনন্দ করব, যখন মানুষকে মেরে ফেলা হচ্ছে’, বলছিল ফিলিস্তিনের গাজার ১১ বছর বয়সী কিশোরী সারাহ আমের। আর ৭ বছর বয়সী ছোট্ট তালা আবু আমরের কথায়, ‘এখানে কোনো আনন্দই নেই।’
বুধবার গাজায় পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার কারণে এ বছর ঈদের কোনো আমেজ নেই উপত্যকাটিতে। এমনকি ঈদেও সেখানে হয়েছে হামলা, ঝরেছে রক্ত। গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় উপত্যকাটিতে এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৪৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১২২ জন।
গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতা শুধু ফিলিস্তিনিদের প্রাণই কেড়ে নেয়নি, সেখানে দেখা দিয়েছে খাবার ও পানির তীব্র সংকট। উপত্যকাটিতে প্রয়োজনীয় ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে চরম দুর্দশায় রয়েছেন সেখানকার ২৪ লাখ বাসিন্দা। তাঁদের বেশির ভাগই এখন আশ্রয় নিয়েছেন একেবারে দক্ষিণে মিসর সীমান্তের রাফাহ এলাকায়।
এত দুর্দশার মধ্যেও গাজার বাসিন্দাদের অনেকে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। রাফায় আশ্রয় নেওয়া হারুন আল-মেদাল্লাল বলছিলেন, গাজার যেসব শিশু মা-বাবা ও বাড়িঘর হারিয়েছে, তাদের মুখে একটু হাসি ফোটাতে বিস্কুট তৈরি করছেন সেখানকার নারীরা। হারুন বলেন, ‘দুঃখ-কষ্ট, ধ্বংস, বাস্তুচ্যুত হওয়া ও নির্বিচার গোলা হামলার মধ্যেও আমরা জীবনকে ভালোবাসি।’