Logo
Logo
×

বিনোদন

‘ফ্যাসিস্টের দোসর’, ফারুকী বললেন, ‘অবিশ্বাস্য অভিযোগ’

Icon

ঢাকা টুডে ২৪ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৯ এএম

‘ফ্যাসিস্টের দোসর’, ফারুকী বললেন, ‘অবিশ্বাস্য অভিযোগ’

সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টার চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ভাষ্য, “আমার মনে আছে ২০১২ সালে শুধুমাত্র কথা বলার জন্য আমি আর ‘আরিফ আর হোসাইন’ লুকিয়ে আমেরিকান ক্লাবে গিয়ে বসে আলাপ করতাম কিভাবে এই জালিম সরকারকে হটানো যায়।”

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর পর ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ অভিযোগকে ‘অবিশ্বাস্য’ বলছেন সদ্য সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পাওয়া চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, “আমাকে মুখোমুখি হতে হয়েছে এক অবিশ্বাস্য অভিযোগের- আমি নাকি ফ্যাসিস্টের দোসর! যেই ফ্যাসিস্টকে তাড়ানোর জন্য জীবনের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাশে দাঁড়ালাম ১৬ জুলাই থেকে, অল আউট অ্যাটাকে গেলাম, এটা জেনে যে ফ্যাসিস্ট হাসিনা টিকে গেলে আমার জন্য অপেক্ষা করছে মৃত্যু অথবা জেল, আমি তারই সহযোগী?”

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফারুকী ফেইসবুক পোস্টে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি এমন সময় এই পোস্ট লিখলেন, যখন তাকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে কেউ কেউ তাকে উপদেষ্টা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলছেন।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের তিন মাসের মাথায় মুহাম্মদ ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদে আরও তিনজন নতুন সদস্য যোগ দিয়েছেন, তাদের একজন ফারুকী। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বঙ্গভবনের দরবার হলে তাদের শপথ পাঠ করান। বাকি দুই উপদেষ্টা হলেন ব্যবসায়ী শেখ বশির উদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. মাহফুজ আলম। পরে রাতে উপদেষ্টা পরিষদে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালিয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় ফারুকীকে।

উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকে অনেকে ফারুকীকে শুভেচ্ছায় ভাসিয়েছেন, আবার কেউ কেউ ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে তাকে উপদেষ্টার পদ থেকে বাদ দেওয়ার দাবিও তুলেছেন। সমালোচনার মুখে ফারুকী ফেইসবুকে লেখেন, “প্রিয় ভাই-বোনেরা, ঘুণাক্ষরেও যা আগে ভাবি নাই, এখন আমাকে সেটাই করতে হচ্ছে। আমি মাত্রই দুই দিন হলো কাজ করছি। এর মধ্যে আমার ধারণা, আমার মন্ত্রনালয়ে সহকর্মীদের মাঝে এই ধারণা দিতে পেরেছি যে, আমরা কিছু দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটাতে চাই, যেটা স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদে আমাদের সংস্কৃতিকর্মীদের কাজে আসবে। যদিও আমি কোনো পদ চাই নাই, তবুও দায়িত্বটা নেয়ার পর আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে করার চেষ্টা করছি।” ফারুকীর ভাষ্য, “শাহবাগ আন্দোলন যখন শুরু হয় আর সবার মত আমিও ভেবেছিলাম এটা নির্দলীয়। যে কারণে আমার সব পোস্টে এটাকে ঠেলে ‘রাষ্ট্র মেরামতে’ এজেন্ডার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম।

“কিন্তু কিছুদিন পরেই যখন বুঝে যাই, তখনই লিখি ‘কিন্তু এবং যদির খোঁজে’। যে কিন্তু এবং যদি শাহবাগ নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলো। বাঙালী জাতীয়তাবাদ আর ইসলামকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে আজকের যে ফ্যাসিবাদের সুচনা করা হয়েছিলো তার প্রতিবাদে লিখি, 'এই চেতনা লইয়া আমরা কি করিবো'। ২০১৪ সালে।”

ফারুকী লিখেছেন, “এই দুইটা লেখার যে কোনো একটা লেখা ছাপা হওয়ার পর বিএনপির শিমুল বিশ্বাস সাহেব ফোন দিয়েছিলেন কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য। আমি কোনো দল করি না। কিন্তু আমি আওয়ামী লীগ হলে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা আমার লেখায় কি খুঁজে পেলেন যে আমার সাথে পরিচয় না থাকা স্বত্বেও আমার নম্বর জোগাড় করে ফোন দিলেন?”

অন্তর্বর্তী সরকারে ফারুকীসহ একাধিক উপদেষ্টাকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর' আখ্যা দিয়ে তাদের অপসারণের দাবি জানিয়ে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কয়েকজন নেতা।

ঢাকা টুডের একটি প্রকাশনা

অনুসরণ করুন