জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে লাল-সবুজে আভায়।
১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির দিন। এই দিনে বিশ্বের মানচিত্রে সৃষ্টি হয় নতুন একটি সার্বভৌম দেশ ‘বাংলাদেশ’-এর। যা বাঙালি জাতিকে এনে দেয় আত্মপরিচয়ের ঠিকানা।
১৯৭১ সালের সংগ্রামের দিনগুলোতে যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এ বিজয় আর বাঙালি জাতির সবচেয়ে আনন্দের দিন ছিনিয়ে এনে দিয়েছেন, সেই সব শহীদকে বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে দেশের সর্বস্তরের মানুষ।
তাই প্রতিবারের মতো এবারও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হতে পুরোপুরি প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ। জাতির গৌরব আর অহংকারের এ দিনটিতে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে নামবে লাখো মানুষের ঢল। তাদের হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে শহীদবেদি।
এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে স্মৃতিসৌধকে সাজানো হয়েছে নানা সাজে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা। দিবসটি উপলক্ষে গণপূর্ত বিভাগের কর্মীদের টানা কয়েকদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে এক নতুন রূপ ধারণ করেছে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। শেষ করা হয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও শোভাবর্ধনের কাজ।
এদিকে, স্মৃতিসৌধ-সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে নতুন সড়কবাতি লাগানো, সড়ক বিভাজকে নতুন করে রঙ দেওয়া ও সড়কে জমে থাকা ধুলোবালি সরিয়ে নিতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদফতরের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এবারও স্মৃতিসৌধকে সাজানো হয়েছে নতুন আঙ্গিকে । শেষ করা হয়েছে ধোয়ামোছা, সাফসুতর ও রঙতুলির কাজ। স্মৃতিসৌধের মূল ফটক থেকে স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত ইটের গাঁথুনিগুলোতে দেওয়া হয়েছে লাল-সাদা রঙের আঁচড়। পায়েহাঁটার পথগুলোর দুই পাশে বসানো হয়েছে লাল টকটকে ফুল গাছের টব। লাল-সবুজের আভায় সেজেছে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর প্রথম প্রহরে মাননীয় রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ফুল দেবেন, এর পরপরই উপদেষ্টা, কূটনীতিক, বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার স্মৃতিস্তম্ভে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাবেন। পরে সৌধ এলাকা সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।’
ঢাকার রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকালে স্মৃতিসৌধ এলাকা পরিদর্শন শেষে বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হবে অতিরিক্ত পুলিশ।’
উল্লেখ্য, মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কর্তৃপক্ষ। গত রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল ফটকে এ সংক্রান্ত নোটিশ টানিয়ে দিয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ কর্তৃপক্ষ।
নোটিশে বলা হয়েছে, মহান বিজয় দিবস ২০২৪ উদ্যাপন উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ভিআইপি নিরাপত্তার জন্য আজ (রবিবার) থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় স্মৃতিসৌধে সব ধরনের দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ ৮ দিন বন্ধ থাকবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।